ভাবসম্প্রসারণ লেখার সঠিক নিয়মঃ
আসসালামুয়ালাইকুম। ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে অনেকের মোটামুটি প্রশ্ন আছে । একটি ভাব সম্প্রসারণ কত পৃষ্ঠা লিখতে হয় এবং পয়েন্ট বা কোটেশন কিভাবে দিতে হয়। তো চলুন আজকে আমরা জেনে নিই ভাব-সম্প্রসারণ কিভাবে লিখতে হয় এবং কিভাবে লিখলে ভালো নম্বর পাওয়া যায়।
ভাবসম্প্রসারণ এর অর্থঃ
ভাব সম্প্রসারণ এর ভাব বলতে আমরা বুঝি মনের ভাব। আর সম্প্রসারণ এর অর্থ বিস্তারিত। মনের ভাব কে বিস্তারিত করে লেখার নামেই ভাব-সম্প্রসারণ। ভাব সম্প্রসারণ এ একজন কবি বা লেখকের দু-চার লাইন থাকে সেটাকে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা করতে হয়।
ভাবসম্প্রসারণ এর পয়েন্টঃ
এই ভাব সম্প্রসারণ এর ক্ষেত্রে আমাদের তিনটি পয়েন্ট মনে রাখতে হবে। ১. মূলভাব ২. সম্প্রসারিত ভাব ৩. মন্তব্য বা উপসংহার।
মূলভাবঃ
ভাব সম্প্রসারণ এর তিনটি অংশের প্রথমে মূলভাব সাধারণত দুই থেকে তিন লাইনের মধ্যে শেষ করতে হবে। হতে পারে দুই লাইনের লেখায় তিন বা চার লাইন হয়ে গেল এতে সমস্যা নেই তবে ছোট করে দুই থেকে তিন লাইনের মধ্যে রাখা ভাল।
সম্প্রসারিত ভাবঃ
সম্প্রসারিত ভাব লেখার সময় আমাদেরকে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। এর মধ্যে হলো দ্বিরুক্তি না হওয়া। দ্বিরুক্তি না-হওয়া বলতে একই শব্দ বারবার লিখবেন না এক্ষেত্রে নাম্বার কম পাবেন। কথা অবশ্যই গুছিয়ে লিখতে হবে কিন্তু দ্বিরুক্তি বা একই কথা বারবার হওয়া যাবে না। লেখার মধ্য আমি আমরা এই শব্দ পরিহার করতে হবে। সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে যেমন, লেখার মধ্যে থাকে আমার মতে এই, আমাদের মতে এই,এ ধরণের শব্দ লেখা যাবে না। এরপর কবি বুঝিয়েছেন বা কবি বলেছেন, কবির মন্তব্য, এগুলো কথা লেখা যাবে না। সম্প্রসারিত ভাবে উক্তি এবং রুপকথা ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ সহজ ভাষা ব্যবহার করতে হবে। সম্প্রসারিত ভাব লেখার সময় আমাদের এই কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
মন্তব্যেঃ
মন্তব্য বা উপসংহারে দুই অথবা এক লাইনের মধ্য শেষ করা ভালো। তবে দুই এক লাইনের কমবেশি হতেই পারে এটা সমস্যা না।
ভাবসম্প্রসারণ কতটুকু লিখতে হবেঃ
একটি ভাব সম্প্রসারণ লিখে ফুল মার্ক পেতে অবশ্যই আপনাকে দুই থেকে আড়াই পৃষ্ঠা লিখতে হবে। দুই থেকে আড়াই পৃষ্ঠা বলতে আপনি দুই পৃষ্ঠা লিখতে পারেন বা তার থেকে একটু বেশি লিখতে পারেন। তবে তার থেকে যদি একটু কম হয়ে যায় তাহলে সেটা মানসম্মত হবেনা। ভাব-সম্প্রসারণ লেখায় তিনটি বিষয় খেয়াল করবেন সেটা হচ্ছে তিনটি প্যারা। ভাব সম্প্রসারণ এর তিনটি প্যারা থাকবে মূলভাব, সম্প্রসারিত ভাব এবং মন্তব্য।
উদাহরণঃ
![]()  | 
| ভাবসম্প্রসারণ: উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে তিনিই মধ্যম যিনি চলেন তফাতে | 
একটি ভাব সম্প্রসারণ এর উত্তর পয়েন্ট আকারে বা কোটেশন আকারে না করলেও হয় শুধুমাত্র প্যারা প্যারা করে দিলেও সেটা সঠিক হবে। কিন্তু শিক্ষকরা সবসময় বলে থাকে কোটেশন বা পয়েন্টগুলোর নাম দিতে। এক্ষেত্রে আপনাকে বলতে পারি আপনি যদি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর মধ্যে বা জেএসসি কিংবা এসএসসি পরীক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি কোটেশন এর নাম দিতে পারেন বা দেওয়াটাই ভালো। তবে আপনি যদি ইন্টার বা এইচএসসি পরীক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে কোটেশন পয়েন্টের নাম না দিয়ে শুধুমাত্র আপনি যদি প্যারা করে দেন, তিন প্যারা করে দেন তাহলে সেটাই আপনার জন্য অনেক ভালো হবে। ভাব-সম্প্রসারণ লিখে ভালো নম্বর পেতে অবশ্যই আপনাকে লেখা সুন্দর করে লিখতে হবে। ভাব সম্প্রসারণ এর নিয়ম গুলো খুব কঠিন নয় নিয়মগুলো প্রথমে আপনার মানতে আপনার সমস্যা একটু হতেই পারে। তবে আস্তে আস্তে লিখতে লিখতে এটা অভ্যাস হয়ে যাবে। তাই একটি ভাব সম্প্রসারণ লেখার সময় বিষয়গুলো মাথায় রেখে লেখা সুন্দর রেখে দুই থেকে আড়াই পৃষ্ঠা লিখতে পারলেই ইনশাল্লাহ ভাব সম্প্রসারণ এ ভালো মার্ক পাওয়া সম্ভব হবে।
তো লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এমন বন্ধুদের কাছে যার কাছে আপনি এই ভাব-সম্প্রসারণ নিয়মটি প্রয়োজনীয় মনে করেন।


