১৪-২৬ বছরের লোকেদের অবশ্যই করণীয়ঃ
এই লেখাটি সেই সকল ছেলে-মেয়েদের জন্য যাদের বয়স ১৪-২৬ বছর। যাদের শরীরে এখন সবথেকে বেশি এনার্জি রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক বড় কাজকে করার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে । মানব জীবনের সবথেকে সুন্দর একটি স্টেজে বর্তমানে আপনি আছেন ।
এই যৌবন কাল যেটিতে আপনি যা চান সেটাই হতে পারবেন, যা চান সেটাই করতে পারবেন। এই সময়টি কিন্তু বেশিদিন থাকে না বড়জোর দশ থেকে বারো বছর - তারপর আপনার মাথার চুল পাকতে ধরবে, কাজে এনার্জি কমে যাবে, ধীরে ধীরে আপনার ফ্রেন্ড সার্কেল ছোট হতে থাকবে। সবাই নিজের নিজের লাইফে বিজি হয়ে যাবে। আজ আপনার যা যা স্বপ্ন রয়েছে, বড় বাড়ি-গাড়ি, নাম-যশ-খ্যাতি, এই টার্গেট গুলির উপর কাজ করার জন্য এর থেকে বেস্ট টাইম আপনি সারা জীবনে আর কোনোদিনই পাবেন না ।
Passion বা  Destruction এই দুটির মধ্যে থেকে আজ আপনাকে কোন একটিকে বেছে নিতে হবে।  আজ অব্দি পৃথিবীর যত বড় বড় কাজগুলি হয়েছে তার মধ্যে থেকে 85 শতাংশ ক্রান্তিকারী কাজ এই বয়সেই হয়েছে বা এই বয়সেই তা শুরু করা হয়েছিল।  এই বয়সে যদি আপনার মনে কোন টার্গেট না থাকে তাহলে আপনি আপনার এই সময়টিকে নষ্ট করে দিচ্ছেন।
আর যদি আপনি অলস হয়ে যান, টাইম ওয়েস্ট করেন, ফালতু ভাবনার জালে জড়িয়ে যান, তার মানে আপনি সেই টাইমটা নষ্ট করে দিচ্ছেন যার ব্যাপারে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন যে "যৌবন কাল হলো জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়। এই সময় আপনি যা যা করবেন সেই কাজগুলো নির্ধারিত করবে যে আপনার ভবিষ্যৎ কেমন হবে।" 
এই সময়টিতে আপনি যতটা রিস্ক নিতে পারেন ততটা পরিমাণ রিস্ক আপনি আপনার সারা জীবনের নিতে পারবেন না। যত বেশি হারবেন বা জিতবেন, ভালো বা খারাপ কাজ করবেন, ততটা আপনি সম্পূর্ণ জীবনে করতে পারবেন না। কিন্তু আজ যে ভালো বা মন্দকাজ আপনি করবেন তার ফল সারা জীবন আপনি পেতে থাকবেন।
You are the creator of your own destiny. আপনি হচ্ছেন আপনার নিজের নিয়তি - এর স্রষ্টা।  আজ এ বয়সে আপনি যতটা কনসেনট্রেট করতে পারেন আপনি সারা জীবনে করতে পারবেন না। যখন আপনি বিয়ে করবেন আপনার সন্তান হবে তখন আপনি অতটা কনসেনট্রেট করতে পারবেন না নিজের স্বপ্ন গুলির উপর।  তখন আপনাকে রিস্ক নিতে ভয় লাগবে।  
তাই আজ এখন আপনি যতটা শিখছেন এবং যতটা রিস্ক নিচ্ছেন তা আপনার সম্পূর্ণ জীবনে কাজে দিতে থাকবে । যদিও লাইফ আপনাকে প্রতিটা মুহূর্তই নতুন নতুন জিনিস শেখাতে থাকবে, কিন্তু সেই সকল শিক্ষার মধ্যে থেকে আপনার আজকের যে জ্ঞান সিটি সবথেকে বেশি প্রয়োজন পড়বে।  আজ আপনি নিজেকে যেমন চরিত্রের বানাবেন তেমনি পার্সোনালিটি বা ব্যক্তিত্ব আপনার সারা জীবন থাকবে। তাহলে একবার ভেবে দেখুন যে আপনার এই যৌবন কালটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ । 
এবার যারা ভাবছেন যে আমি কি করবো? কিভাবে রিস্ক নিব? কিভাবে এই সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাবো? তাদের উদ্দেশ্যে বলি, আপনি শুধু পর্যবেক্ষণ করুন, বুঝতে পারছেন না - বোঝার দরকার নেই, কাজে লাগাতে পারছেন না - কোন ব্যাপার নেই, রিস্ক নিতে পারছেন না - নিতে হবে না। আপনি জাস্ট অবজাভ করুন,পর্যবেক্ষণ করুন দেখবেন জীবন আপনাকে আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেবে ।
আজ আপনি দৃঢ় মনে যে কাজ করবেন, আজ থেকে কয়েক বছর পর আপনি নিজেকে যে স্থানে দেখতে চান, আজ দেখা স্বপ্ন গুলি কে যদি আপনি পূরণ হতে দেখতে চান, তাহলে এগুলো প্রস্তুতির জন্য আজ থেকে ভালো সময় আপনার কাছে আর কোনদিনও আসবেনা। যে ফিল্ডে হোক না কেন, যেমন ধরণেরই ফিল্ড হোক না কেন - আপনার যে ফিল্ডে গভীর আসক্তি রয়েছে, আপনি যে ফিল্ডে ইন্টারেস্টেড আছেন সেটিকে শুরু করার আজই হলো সবথেকে বেস্ট সময়।
কোন ফিল্ডই ছোট নয়। প্রতিটি ফিল্ডেই মহান ব্যক্তি রয়েছে। মানে আপনার যে ফিল্ডে ইন্টারেস্ট রয়েছে সেটি আপনাকে নাম যশ খ্যাতি এবং শান্তি সবই দিতে পারবে। তাই কোন ফিল্ড বড় এবং কোন ফিল্ড ছোট এরকম ভাববেন না। Find out your passion. স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, "ওঠো জাগো এবং ততক্ষণ অব্দি কাজ করতে থাকো যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি তোমার গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছ"।
যখন আপনি অসুস্থ হন তখন রাতে কোন কোন দিন আপনার ঘুম ধরে না ঘুম এলেও মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙে যায় আর ঘুম আসতে চায় না। তো কোন রোগ যদি আপনার নিদ্রা ভঙ্গ করতে পারে তাহলে একই অধিকারটি আপনি আপনার স্বপ্নকেও কেন দিচ্ছেন না। এই স্বপ্নগুলো আপনাকে জাগিয়ে দেবে আপনাকে ঘুমাতে দেবে না বলবে অনেক ঘুমিয়ে নিয়েছি এবার স্বপ্নকে পূরণ করার জন্য কাজ কর।একবার নিজের উপর বিশ্বাস তো করে দেখুন, একবার জয়ী হয়ে তো দেখুন, একবার মনের গভীরে গিয়ে তো দেখুন, একবার কোন টার্গেট কে পূরণ করে দেখুন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিজের উপর বিশ্বাস করবেন না ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার ঈশ্বরেও বিশ্বাস করা উচিত নয়। কারণ ঈশ্বর তাদের সাহায্য করেন যারা নিজের উপর বিশ্বাস করেন। ঈশ্বর তাদেরকেই পথ দেখান যারা নিজের চলার জন্য ইচ্ছুক থাকেন।
একবার ভেবে দেখুন যে মনে হয় গতকালের কথা ছিল আপনি ছোট ছিলেন কত কৌতূহলী ছিলেন হ্যাপি ছিলেন লাইফ একদম বিন্দাস ছিল আর দেখুন আজ আপনি কত বড় হয়ে গেছেন। কত চিন্তাভাবনা, টেনশন, স্ট্রেস, রেস্পন্সিবিলিটি এসে পড়েছে। একই ভাবে দেখবেন আপনার বার্ধক্যও তাড়াতাড়ি চলে আসবে। এখন যারা আপনার সবকিছু, যাদেরকে আপনি নিজের সার্কেল মনে করছেন তাদের মধ্যে থেকে 90 শতাংশ ব্যক্তি সেই সময় আর থাকবে না। কারণ এটা সময়। নদীর মত বয়ে চলেছে। এই জন্যই বলছি যে একসময় এমন আসবে যখন আপনার কাছে আর সময় থাকবে না। তখন দেখবেন যে সময় নেই বটে কিন্তু মনের স্বপ্নগুলোর পাহাড় জমে রয়েছে। তখন আফসোস করা ছাড়া আপনি আর কিছুই করতে পারবেন না। তাই আজ বরং এখন থেকেই যে অভ্যাস গুলোর কারণে আপনার সময় নষ্ট হচ্ছে সে অভ্যাস গুলোকে ত্যাগ করার সময় চলে এসেছে। আর যে ভাবনাগুলি মনে আসার কারণে আপনার সম্পূর্ণ দিনটি বিনষ্ট হয়ে যায় সেই ভাবনাকে ত্যাগ করার সময় চলে এসেছে।
আপনি হয়তো জানেন না কিন্তু আপনার যে সামর্থ্য আছে তা হলো অনন্ত বা ইনফিনিটি। আপনার মধ্যে অনন্ত বা ইনফিনিট ক্ষমতা আছে। আপনি তো জাস্ট ক্ষণিকের আনন্দের জন্য এই বড় বড় ডিমগুলি থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যান। এই যৌবন কালে আপনি চাইলে 10 ঘন্টা মোবাইলে গেম খেলতে পারেন, ড্রিঙ্ক করতে পারেন, স্মোকিং করতে পারেন, পার্টি করতে পারেন, ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা বলতে পারেন। অবশ্যই এগুলো আপনাকে ক্ষণিকের সুখ ও আনন্দ দেবে।
কিন্তু দিন শেষে আপনি পাবেন আপনি নিজেই আপনার জীবনকে নষ্ট করছেন। আপনি হয়তো এটা এখন ফিল করতে পারছেন না। কিন্তু যারা এই 26 27 বছরের যৌবনকালটাকে পার করে এসেছে তারা এখন এই জিনিসগুলো কে হাড়েহাড়ে বুঝতে পারছে। আর এই সময় যদি একবার পার হয়ে যায় তখন যদি আপনি ভাবেন যে আমি এখন শুধরাবো, নিজেকে ঠিক করব, আপনি পাবেন যা আপনার কাছে সময় নেই। তাই আপনাকে এখনই পরিবর্তন হতে হবে। Create your own emergency. আপনি নিজে এমার্জেন্সি ক্রিয়েট করুন Emergency to work hard.
যেভাবে ডক্টরের কাছে যখন কোন ইমারজেন্সি ঘটনা আসে তখন তিনি একেবারেই সময় নষ্ট করেন না। এরকম ভাবে আপনিও ইমারজেন্সি ক্রিয়েট করুন যে, আপনার কাছে সময়ের অভাব রয়েছে। যদিও আজ নিজের স্বপ্নকে পূরণ করার জন্য হাই রিস্কও নিতে হয় তবুও নিন। লাইফে রিস্ক নেয়া খুবই জরুরি। যদি আপনার রিস্ক নেয়া সাকসেসফুল হয় তাহলে আপনি তো জিতে যাবেন। আর যদি আপনি জিততে না পারেন তাহলে আপনি অভিজ্ঞতা-এক্সপিরিয়েন্স পাবেন।
এই অভিজ্ঞতাকে আপনি লোকেদেরকে শেয়ার করতে পারেন। এই অভিজ্ঞতা দ্বারা আপনি পৃথিবীকে গাইড করতে পারবেন। আজ আপনি লাইফের যে স্টেজে আছেন এখানে ডিস্ট্রাকশন এর অভাব নেই। হাজার হাজার জিনিস রয়েছে যা আপনাকে পথভ্রষ্ট-ধ্যানভ্রষ্ট করতে পারবে। এই সময়ে আপনি বহু লোককে পাবেন যারা না চাইতেও আপনাকে বহু গাইডেন্স এবং উপদেশ দেবে। কিন্তু এটি আপনার ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে যে আপনার জন্য কোনটি ঠিক। লাইফে বড় হওয়া জন্যে সবথেকে প্রথমে আপনাকে নিজের মাইন্ড সেট কে চেঞ্জ করতে হবে।
নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভালো চিন্তা ভাবনা রাখতে হবে। নিজের মস্তিষ্ককে ফিট রাখতে হবে। নিজেকে কম মনে করা আপনার সব থেকে বড় ভুল। লাইফে প্রবলেম আসবে চলে যাবে। They are just part of life. They are not life. নেগেটিভ চিন্তা এবং নেগেটিভ ইমোশনস আপনাকে ধীরে ধীরে মেন্টালি অসুস্থ করে তুলবে। আর এ নেগেটিভ চিন্তা আপনাকে দিয়ে কোন না কোন নেগেটিভ কাজ অবশ্যই করাবে।
আজ আপনার এই যৌবন কে একটি আশীর্বাদ মনে করে এই সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করা উচিত। কারণ আপনি বহু চাপ সহ্য করে নিতে পারবেন। কিন্তু বয়স কালে আপনি প্রেসার গুলিকে নিতে পারবেন না। So let think big. let's achieve your dreams and let's begin.
আশা করছি এই লেখাটি পড়ে আপনি অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পেরেছেন। লেখাটি ভাল লেগে থাকলে শেয়ার অবশ্যই করবেন।
