Why people hate you?
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় Grandism নামক একটি রোগ আছে এবং এই রোগটা একদিনে আমাদের মধ্যে ডেভলপ করে না বা প্রকাশ পায় না । এটা আস্তে আস্তে আমাদের মধ্যে ডেভলপ করে বা প্রকাশ পায় । এই Grandism টা কি জিনিস? এবং এটা আমাদের মোটামুটি ধরে নিতে পারো অনেক মানুষ লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষের মধ্যে এই রোগটা ধীরে ধীরে ডেভলপ করে বা বিকাশ লাভ করে।
এর জন্য আমরা নিজেরাও অসুখী থাকি এবং আশেপাশের মানুষজন কেও আমরা অখুশি রাখি। তো এই Grandism জিনিসটা আসলে কি তার বিস্তারিত আলোচনা করবো এবং কেন মানুষ তোমাকে পছন্দ করে না, কেন তুমি অনেকের কাছে অপ্রিয় হয়েছ এই কথাগুলো নিয়ে আমি কিছু পয়েন্ট তোমাকে বলবো।
কেউ যখন বাসায় দাওয়াত দেয়ঃ
যখন আমরা দাওয়াত খেতে যায়ঃ
তো তোমাকে কেউ দাওয়াত করে যাই খাওয়াক না কেন, তুমি সেটাকে তৃপ্তি সহকারে খাবে এবং চেষ্টা করবে খাওয়ার পর যে কৃতজ্ঞতা বা তার প্রতি যে সন্তুষ্টি এই সন্তুষ্টি তুমি যেন প্রদর্শন করতে পারো ।
এবার শিক্ষার একটা বিষয় বলি:
অনেক ব্যক্তি আছে যারা ভালো জায়গা থেকে পাশ করার পর বলে আমি সচরাচর কাউকে স্যার ডাকি না। আমার বিবেগ এ বাধে বা ইগোতে বাধে। মানে তাদের ধারণা এমন আমি খুব ভালো জায়গা থেকে পড়াশুনা করেছি , যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা ডিপ্লোমা থেকে পড়াশুনা করেছে আমার থেকে সিনিয়র বা ঊর্ধ্বতন তাকে স্যার ডাকতে পারবো না। কিন্তু তার অবস্থান আমার থেকে বড়। এটা কিন্তু একটা Grandism এর চিহ্ন বা অহংকার এর চিহ্ন তাই না? এইটা তোমার চরিত্রের মধ্যে থাকলে কিন্তু তুমি দেখব খুব একটা সুবিধা জনক অবস্থানে যেতে পারছো না। অনেক মানুষ তোমাকে অপছন্দ করতে শুরু করবে। আর আমরা যেহেতু মানুষের মধ্যেই বাস করি বা সমাসবদ্ধ জীব সেহেতু মানুষের অপ্রিয়টা আসলে হওয়া যাবেনা। এ বিষয় তা খেয়াল রাখতে হবে।
তোমার থেকে বড় যেই হোক না কেন তুমি যদি তাকে স্যার ডাক তাহলে তোমার নিচু হওয়ারও কিছু নাই বা তার উঁচু হওয়ারও কিছু নাই। কারণ স্যার মানে কি? স্যার এর বাংলা মানে হলো জনাব। এটাকে নৈমিত্তিক বেপার হিসাবে নিতে হবে।
একটি শিক্ষণীয় উদাহরণঃ
জাপানে বাচ্চারা যখন রাস্তা পার হয় তখন দেখার সাথে সাথে সমস্ত গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। এবং রাস্তা পার হওয়ার পরে বাচ্চারা তাদের প্রতি মাথা নত করে সম্মান প্রদর্শন করে। ঐ শিশুরা তাকে যখন সম্মান দেয় তখন গাড়ির ভেতরের মানুষ টাও তাদের মাথা নত করে সম্মান দেখায় বা ভালোবাসা দেখায়। কারণ কি জানো? কারণ সেও কিন্তু ছোটবেলা থেকে এটা দেখে দেখে বড় হয়েছে। এ জন্যে ছোটবেলা থেকে তোমাকেও চেষ্টা করতে হবে তোমার মধ্যে বাজে গুণ গুলো না আসে। তা না হলে তোমার ভবিষ্যত কর্মজীবনের জন্য খুব খারাপ হবে।
নব্য বড়লোক সমস্যাঃ
নব্য বড়লোক নামক একটা শব্দ সোসাইটিতে পরিচয় আছে। মনে করো হঠাৎ করে খুব বড়লোক হয়ে গেছে। কোনো একটা উৎস থেকে হঠাৎ টাকা পেয়েছে বা দুর্নীতি করে হোক, মানে শর্টকাট ভাবে বড়লোক হয়েছে। মানুষের তো ধনী হতে সময় লাগে অনেক সময় লাগে। সে কোনভাবে হঠাৎ করে ধনী হয়ে গেছে। তার বাসায় বেড়াতে যাওয়া খুব বিপদজনক। কেন জানো? তো তার বাসায় গেলে সে তোমাকে তার বাসার নানান জিনিসের দাম বলে বলে তোমার মাথা খারাপ করে দেবে। তার সোফার দাম কত, তার টিভির দাম কত,তার ফ্রীজ এর দাম কত। এটাও কিন্তু একটা Grandism এর চিহ্ন। এ গুলো সব এ কিন্তু রোগ। এ গুলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় Disease বলে।
তাই খেয়াল রাখতে হবে যদি তুমি ধনী হও তোমার থেকে একটু আর্থিকভাবে কম সচ্ছল যারা তাদের প্রতি তুমি এগুলো কিন্তু দেখাবে না এটা খুব হৃদয়বিদারক। সেই লোকটার কিন্তু প্রচুর পরিমাণ কষ্ট হয় এগুলো দেখার পরে।
অহেতুক টাকার গরম এবং এই টাকার গরম কিন্তু খুব বাজে জিনিস। তুমি যখন কাউকে দেখাবা তখন মানুষ বলবে খুব অহংকারী, দম্ভ নিয়ে ঘুরে বেড়াছে ভাব মারছে। এগুলো খুব খারাপ জিনিস মানুষের কাছে তুমি খারাপ হবা, ছোট হবা।
আমি একটা মজার জিনিস বলি:
মহাত্মা গান্ধীর একটা কথা আছে সেটা হলো যে:তোমার আচরণ কেমন, তুমি মানুষ হিসাবে কেমন, এইটা আসলে নির্ভর করে তুমি তোমার superior বা উচ্চতরর সাথে কেমন আচরণ করো তার ওপর না। তোমার থেকে যারা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে হোক, আর্থিক ভাবে হোক তোমার থেকে যারা একটু নিচু এদের সাথে তুমি কিভাবে আচরণ করো এর ওপর তোমার মানসিকতা বা মানুষ হিসাবে কেমন তা নির্ভর করে।
তুমি একটা জিনিস চিন্তা করো। তোমার থেকে যে সিনিয়র বা তোমার থেকে অনেক টাকা পয়সাওয়ালা, তোমার থেকে অনেক ক্ষমতাশালী তার কাছে তুমি কিন্তু এমনেই টাইট হয়ে যাবা। এমনেই কিন্তু তুমি নত হবা। কিন্তু ওই জিনিসটা আসলে প্রদর্শন করা উচিত যারা তোমার থেকে একটু নিচু তাদের প্রতি। Then you are called a good human being. তাহলে তোমাকে ভালো মানুষ বলা হবে। সবসময় খুব ভাব নিয়ে , আভিজাত্য নিয়ে থাকার দরকার নেই। যে আমি খুব বড় কিছু হইছি, আমি কারো সাথে খুব একটা কথা-বাত্রা বলি না, আমি খুব Attitude নিয়ে থাকি। এগুলা মানুষ পছন্দ করে না।
অরে ভাই জীবন কয় দিনের? আজ আছো কাল নাই। যেকোনো মুহূর্তে আমরা মারা যেতে পারি। আমরা মারা যাওয়ার পর কিন্তু আমাদের কৃতকর্ম গুলো পৃথিবীতে থাকবে। তুমি ভালো কাজ করলে , তুমি পৃথিবীতে যখন থাকবে না মানুষজন তোমার সুনাম করবে। বলবে, না লোকটা ভালো মানুষ ছিল তার হাতে ২/৪ জন মানুষের উপকার হয়ছে।
তুমি খুব ভাব মেরে থাকলে। তোমাকে একজন ফোন দিলো, ভাব এর চোটে কোথায় বললে না। ফোন এর পর ফোন দিয়েই যাচ্ছে তুমি কারো ফোন ধরছো না, মনে করছো দেখ তুে আমার কাছে ঠেকা ,আমার কাছে ধরা বলে আমার কাছে ফোন দিতেছিস। আমি তোর ফোন ধরি না , মানে আমি সিনিয়র কেউ একজন। এইটা আসলে তোমার দাম্ভিকতা। তোমার Grandism প্রকাশ করে।
আমাদের প্রত্যেকেরই নানা ধরণের মানসিক বা সাইকোলজিকাল (Psychological) সমস্যা আছে। তার মধ্যে Grandism হলো একটা মারাত্মক সমস্যা। তুমি দেখবা এই Grandism রোগ টা তোমার মধ্যে থাকে তাহলে আস্তে আস্তে তুমি লোকের থেকে আলাদা হয়ে যাবা। খুব একা হয়ে যাবা। তোমার আশেপাশে কিন্তু মানুষজন থাকবে না।
Grandism এর কিছু উদাহরণঃ
সেলসে যারা জব করে , বিভিন্ন দোকানে যারা যায় তারা এই সমস্যাটার সম্মুখীন হয় বেশি। মনে করো একটা দোকানে তুমি বিস্কুট বিক্রি করতে গেছো। সব দোকানদার না কিন্তু অনেকে আছে যাদের মনের মধ্যে চলে , দেখ তুই আমার কাছে বিক্রি করতে আইছোস। আমার থেকে তুই কিন্তু অনেক ছোট। বা পাত্তাই দেয়না এমন একটা অবস্থা। ওই সময় এর ক্ষেত্রে কিন্তু ওই দোকানদারটা Grandism এ ভোগে।
সবথেকে ভালো উদাহরণ হলো, তুমি যখন পাশের বাসার আন্টির ছেলে বা মেয়ের থেকে পয়েন্ট কম পাও। বাকিটা আমাকে বলা লাগবে না তোমরা বুঝতে পারবে।
Grandism মানুষের কাছে একটু টাকা হলে বা ক্ষমতা হলে আসে তা না কিন্তু। প্রত্যেকটা লেয়ার বা ধাপে আলাদা রকমের Grandism আছে।
যেমন ,১০ জন রিকশা চালক এর মধ্যেও Grandism থাকতে পারে। একজন মনে করো একটু দেখতে শুনতে ভালো বা তার একটা ভালো ফোন আছে বা মনে করো তার রিকশা সুন্দর, সেও কিন্তু একটা আভিজাত্য বা Grandism এর মধ্যে ভুগতে থাকে। তো এ গুলো খুব মারাত্মক জিনিস বুজছো।
Grandism রোগীদের লক্ষণ সমূহ ঃ
সব জায়গা তে দেখবা যে, এই Grandism এর রোগীরা নিজেকে সবসময় সব জায়গাতে বড় বলে প্রমান করতে চায়। নিজের বাচ্চা হোক, নিজের পোশাক-আশাক হোক, নিজের কোনো একটা ব্যবহার্য জিনিস হোক, নিজের ফোন হোক সব জায়গাতে এরা সুনাম করেই বেড়াবে যে আমি বিশাল একজন কিছু ,আমি অনেক বড়ো কিছু করে ফেলেছি। কথা গুলা বলছি এ জন্যে যার ইতিমধ্যেই এই রোগ তা হয়ে গেছে তাকে ওখান থেকে বের করা খুবই মুশকিল যদি সে না চায়। এমন কিন্তু হাজার কোটি কোটি মানুষ আছে। এই ধরণের রোগে রোগাগ্রস্থ। তারা হয়তো ডাক্তার এর কাছে চিকিৎসা নিতে যায়না কিন্তু তারা প্রকৃতপক্ষে অসুস্থ।
আমি কথা গুলো কিন্তু তোমার জন্যে বলছি, তুমি এখন হয়তো ছোট মানুষ তোমার মধ্যে যেন এইটা ডেভেলপ না করে। কারণ তোমার মধ্যে যদি এইটা ডেভেলপ করে তাহলে মানুষজন তো পছন্দ করবেই না এবং তুমি দেখব সবার থেকে আস্তে আস্তে আলাদা হয়ে যাচ্ছ। সবসময় Positive বা ইতিবাচক Attitude (মনোভাব) রাখবা। যাতে তোমার Attitude দেখে কারো হেল্প হয়, কারো উপকার হয়।
আমার নিজের মতামত ও শেষ কথাঃ
সুতরাং , তোমাকে খেয়াল রাখতে হবে যে, তোমার মধ্যে যেন এ ধরণের Grandism না ডেভেলপ করে। তা না হলে তুমি তো তোমার কর্মজীবন বা Career এর ক্ষেত্রে খুব ক্ষতিগ্রস্ত হবা পাশাপাশি মানুষজনের কাছে তুমি খুব অপ্রিয় পাত্র হয়ে যাবা। So be very Alert be very Careful.
সবসময় একটা হাসিখুশি অবস্থায় থাকো, তুমি সাহায্য করো আশেপাশের মানুষজন দের। আর্থিক ভাবে হয়তো আমাদের সবার সামর্থ অতবেশি নেই। না পারলে সমস্যা নেই কিন্তু তোমার বুদ্ধি দিয়ে হোক ,তোমার কথা দিয়ে হোক, তোমার পরামর্শে অন্তত যেন কারো ভালো হয়। তোমার থেকে যেন কোনো ভুল তথ্য প্রেরণ না হয়। তোমার থেকে মানুষজন যেন ভালো কিছু শিখতেপারে এ বিষয় তা দেখবা। আশা করি তুমি একজন খুব ভালো মানুষ হবা এবং সবাই তোমাকে পছন্দ করবে।
