বুদ্ধিমান ব্যাক্তিদের ১০ টি লক্ষণ ঃ
এমনটি হতে পারে আপনি একজন জিনিয়াস বা বুদ্ধিমান কিন্তু আপনি এতদিন এ কথাটি জানতেন না। আপনাদের মধ্যে অনেকে ভাবতে পারেন, আমার তো পরীক্ষায় এত মার্কস আসে না ধুর আমি কোনো কাজের না। জিনিয়াস তো দূরের কথা আমার দ্বারা সাধারণ কাজও হবে না। কিন্তু জিনিয়াস বলতে আমি তাদের বলছি না, যারা পরীক্ষায় ১০০ মার্কেস মধ্যে ১০০ তোলে। জিনিয়াস কথাটির মানে একটু আলাদা। এটি তো একটি সাধারণ ব্যাপার যে কোনো ব্যক্তি বহু বছর পড়াশোনা করার পর জিনিয়াস হন। কিন্তু সম্প্রতি গবেষকরা কিছু লক্ষণ কে আবিষ্কার করেছেন যার মাধ্যমে আপনি জানতে পারেন, আপনি একজন জিনিয়াস ব্যক্তি না একজন সাধারণ ব্যক্তি। আমি আজ এমন কিছু আচরণ বা অভ্যাস সম্পর্কে বলবো এবং সে গুলো যদি আপনাদের মধ্যে থেকে থাকে তাহলে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আপনি একজন জিনিয়াস ব্যক্তি না একজন সাধারণ ব্যক্তি।
যে বিষয় গুলো আপনাকে বলবো সে বিষয় গুলো হাস্যকর বলে মনে করে নিয়েন না। কারণ বিজ্ঞানীরা মানুষের ব্রেন বা মস্তিস্ককে অনেক বছর ধরে গবেষণা করার পর এই লক্ষণ বা চিহ্ন গুলো আবিস্কার করেছেন। সুতরাং, আমি আপনাকে যে তথ্য দিবো তা বৈজ্ঞানিক এবং আপনার দরকারি। এই লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ুন তাহলে আপনি জানতে পারবেন আপনি একজন জিনিয়াস ব্যক্তি না একজন সামান্য ব্যক্তি। যে পয়েন্ট গুলা বিজ্ঞানীরা বলেছেন সেই পয়েন্ট এর সাথে আপনার তুলনা করে দেখবেন যে মিলছে কিনা। সেই লক্ষণ গুলো যদি আপনার সাথে মিলে যায় তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি একজন সামান্য ব্যক্তি না আপনি একজন জিনিয়াস ব্যক্তি এবং আপনি অন্যদের থেকে আলাদা।
১০. Staying up late বা রাত্রি বেলায় অনেক্ষন জেগে থাকাঃ
জিনিয়াসের মস্তিস্ক সবসময় কিছু করতে চায় এ কারণের জন্যেই রাতে দেরিতে (দেরিতে বলতে সকলের থেকে দেরিতে) ঘুমানোর অভ্যাস আছে। এমনটি যদি আপনার সাথে হয়ে থাকে তাহলে আপনি জিনিয়াসদের তালিকার মধ্যে পড়েন। রাত জাগা মানে এইনা যে আপনি মুভি দেখেন, গেম খেলেন, Youtube এ ভিডিও দেখেন বা বান্ধবীর সাথে ঝগড়া করে রাত জাগেন। জিনিয়াসরা গভীর রাত অব্দি একারণেই জাগে কারণ তাদের জ্ঞান এবং তথ্যের প্রচুর ক্ষিদে। আর এই খিদে দূর করার জন্যেই জিনিয়াসরা গভীর রাত অব্দি জাগে। রাতের সময় টা তাদের কাছে এমন সময় যে সময় তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে ভাবতে পারে কোনো কিছু। এ জন্যে জিনিয়াসরা Insomnia বা অনিদ্রা অর্থাৎ ঘুম না আসার অসুখের ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন । এই অনিদ্রায় ভোগ জিনিয়াসদের কথা আপনি ইতিহাসে পেয়ে যাবেন।
- মহান বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা (Nikola tesla) যার কারণে আপনার বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছায়। তিনি দিনে মাত্র দেড় থেকে দুই ঘন্টা ঘুমাতেন।
 - মহান চিত্রকর লিওনার্দো দা ভিঞ্চি (Leonardo da Vinci) যিনি মোনালিসা চিত্রটি এঁকেছিলেন। তিনি দিনে মাত্র ৩ ঘন্টা ঘুমাতেন।
 
এমন বহু উদাহরণ আছে যেগুলো আপনি গুগলে অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন।
৯. Laziness বা অলসতাঃ
আপনি বিশ্বাস করুন বা না করুন, কিন্তু বিজ্ঞানীদের গবেষণায় পাওয়া গেছে যে সমস্ত লোকেরা জিনিয়াস বা বুদ্ধিমান হয় তারা সাধারণ লোকের তুলনায় অলস হয়। তারমানে এই নয় আপনি এখন থেকে অলস হয়ে যাবেন। এই কথাটির একটি বৈজ্ঞানিক বেখ্যা আছে। সারাদিনে আপনি যে খাবার খান এবং সেখান থেকে যে পরিমান শক্তি উৎপন্ন হয় তার ২০ শতাংশ শক্তি আমাদের ব্রেন বা মস্তিস্ক ব্যবহার করে। জিনিয়াস ব্যক্তি যখন কোনো কাজ করে বা কোনো কথা ভাবে বা কোনো জিনিস খোঁজার চেষ্টা করে তখন তাদের ব্রেন স্বাভাবিকের থেকে বেশি পরিমান শক্তি ব্যবহার করে। কারণ তাদের ব্রেন বেশি বুদ্ধিমান হয়। এ কারণে তাদের ব্রেন খুব তারাতারি অলস হয়ে পরে।
জিনিয়াসদের অলস হওয়ার পেছনে আরো একটি কারণ আছে। সেটি হলো তারা সকল কাজ কে শর্টকাট ভাবে করার চেষ্টা করে অলসতার কারণে। আর এই কারণের জন্যেই আমরা Technology বা প্রযুক্তিতে এত অ্যাডভান্স হতে পেরেছি। জিনিয়াসরা বিভিন্ন কাজ গুলা করার জন্যে শর্টকাট টেকনিক খুঁজে বের করলেন।
যেমন মনে করুন টিভি রিমোট। টিভিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে আপনাকে যেন টিভির কাছে যেতে না হয় তার জন্যে আবিষ্কার করা হলো রিমোটের। তারমানে এই নয় আপনি লেখাটি পড়ার পরে অলস হয়ে পড়লেন। আমি শুধু মাত্র বিজ্ঞানীদের কথাই আপনাকে জানাচ্ছি। সাধারণ ব্যক্তিদের অলসতা আর জিনিয়াস ব্যক্তিদের অলসতার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।
৮. Addiction for something বা কোনো কিছুর প্রতি আসক্তিঃ
কোনো কিছুর প্রতি যদি আমাদের আসক্তি বা নেশা হয় তখন কিন্তু সেটি একটি হরমোনের কারণে হয়ে থাকে। যার নাম হলো ডোপামিন (Dopamine). যারা জিনিয়াস হন তাদের ব্রেন অন্যদের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হয় এবং তাদের ডোপামিন সংবেদনশীলতা অনেক বেশি হয়ে থাকে। অর্থাৎ তাদের ব্রেন সবসময় উঁচুতে থাকতে চায়। এটার কারণে তাদের কিছু না কিছুর প্রতি খুব বেশি আসক্তি বা নেশা থাকে।
৭. Less social বা কম সামাজিকঃ
কম সামাজিক হওয়া বা লোকের সাথে কম কথা বলা অথবা লোকের সাথে মেলামেশা কম করা। এ গুলো কিন্তু একধরণের নেগেটিভ জিনিস। আর এই Negativity বা নেতিবাচকতা গুন্ গুলো সেই সমস্ত লোকের মধ্যে পাওয়া যায় যাদের ব্রেন জটিল(Complex) এবং বুদ্ধিমান(Intelligent) হয়। কারণ তাদের ভাবনা চিন্তা অনেক জটিল হয়। সে কারণেই তারা সমাজে বেশি কথা বলা এবং লোকের সাথে বেশি মেলামেশা করা তাদের পছন্দ হয়না। তাদের আগ্রহ এবং ভাবনা সমাজের অন্য মানুষের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। একটি নয় দুইটি নয় হাজার হাজার গবেষণায় পাওয়া গেছে, Intelligent people are less social (বুদ্ধিমান মানুষ কম সামাজিক হয়).
৬. Urge for new things and traveling
যদি আপনি নতুন নতুন জায়গায় যাওয়া পছন্দ করে থাকেন তাহলে স্বাগতম, কারণ জিনিয়াসদের ব্রেন নতুন জায়গা কে অনুসন্ধান করতে পছন্দ করে। একটি শব্দ আছে Novelty, এর অর্থ হলো নতুন কোনো জিনিসকে দেখা। জিনিয়াসদের মধ্যে এই Novelty'র ইচ্ছা খুব বেশি পরিমানে থাকে। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে প্রতি সেকেন্ডে আপনার কিছু নতুন জ্ঞান লাভ হচ্ছে। এই নতুন শব্দটি হলো Novelty. সুতরাং, আপনি যদি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করার ইচ্ছা পোষণ করেন তাহলে আপনি জিনিয়াসদের তলিকায় পরেন।
৫. Thinking before sleep বা ঘুমানোর আগে চিন্তা করাঃ
ঘুমানোর আগে কোনো বিষয় কে নিয়ে আপনার যদি ভাবার অভ্যাস থাকে তাহলে আবারো আপনাকে স্বাগতম জিনিয়াসদের দলে। আগের দিনে কি কি ঘটনা ঘটেছিলো, আজকের দিনে কি কি ঘটনা ঘটলো এবং কালকে কি কি ঘটনা ঘটবে, এই সকল ঘটনা যদি ঘুমানোর আগে আপনার মস্তিস্ক ভেবে থাকে তাহলে এটি একটি সংকেত আপনি একজন জিনিয়াস। এটার কারণ হলো জিনিয়াসদের ব্রেন স্মার্ট এবং তাদের ব্রেন সবসময় কিছু না কিছু ভাবতেই থাকে যাতে জিনিয়াসরা পরের দিনের ঘটনাকে সামলাতে পারে। যারা নরমাল লোক হয় তারা বেশি ভাবনা চিন্তা করে না। কিন্তু যারা জিনিয়াস হয় তাদের ব্রেইনের মধ্যে কোনো না কোনো এক্টিভিটি হতেই থাকে। সে প্রতিটা জিনিসকে খুব গভীর ভাবে দেখে।
৪. Curious nature বা কৌতূহলী প্রকৃতিরঃ
একজন জিনিয়াস সবসময় কৌতূহলী হয়। কৌতূহলী কথাটির অর্থ হলো কোনো জিনিসকে জানার ইচ্ছা। সাধারণ মানুষদের মধ্যে সাধারণ কৌতূহল থাকে। কিন্তু যারা জিনিয়াস তাদের কৌতূহল অনেক উচ্চস্তরের হয়। কোনো জিনিসকে জানার ইচ্ছা যদি অন্যদের থেকে আপনার বেশি হয়ে থাকে তাহলে আপনার ব্রেনের নিউরনের ঘনত্ব বাকিদের ব্রেনের থেকে অনেক বেশি হয়। এই কারণের জন্যে কোনো জিনিসকে জানার ঈসাকে আপনার অন্যদের থেকে বেশি হয়ে থাকে।
৩. Talking to yourself বা নিজের সাথে কথা বলাঃ
জিনিয়াসরা নিজেদের সাথে কথা বলতে ভালোবাসে এবং এই এক একা নিজের সাথে কথা বলাটি খুব স্পেশাল বা বিশেষ জিনিস। এই ক্ষমতা সকলের মধ্যে থাকেনা। যদি আপনি জিনিয়াস হয়ে থাকেন তাহলে আপনি কোনো জিনিসকে গভীর ভাবে ভাবেন, সেটিকে বোঝার চেষ্টা করেন এবং মাঝে মাঝে নিজের সাথে কথা বলেন।
২. Blue eyes বা নীল চোখঃ
এই কথাটা তো আপনি নিশ্চয় জানেন যে, পৃথিবীতে ৭০০ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৮% লোকের নীল চোখ আছে। অনেক গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় পাওয়া গেছে যাদের নীল চোখ থাকে তারা Strategic thinker বা কৌশলগত চিন্তাবিদ হয়ে থাকেন।
১. Nails sign বা নখের চিহ্নঃ
যদি আপনার ডান আঙুলের নখে এই ধরণের চিহ্ন থেকে থাকে তাহলে আপনার বুদ্ধিমত্তা অনেক বেশি।
বুড়ো আঙুলের এই সাদা দাগ যত গভীর হবে তার মানে আপনি ততো যৌক্তিক।  এই চিহ্নটি একটি রেয়ার জিনিস কারণ খুব কম মানুষের মধ্যে এটি দেখতে পাওয়া যায়।  নীল চোখের কথা যেমন উল্লেখ করলাম তেমন। 
বুড়ো আঙুলের মধ্যে এই সাদা দাগ Eastern country গুলোর মধ্যে বেশি দেখা যায়। যেমন ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল এইসমস্ত দেশে মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই কারণের জন্যেই বলা উচিত We eastern people are intelligent.
উপরের এই ১০ টি লক্ষণের মধ্যে কোনটা কোনটা আপনার সাথে মিলেছে তা কিন্তু অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। কারণ আমি জানতে চাই এই ১০ টি চিহ্নের মধ্যে কয়টি করে আপনাদের মধ্যে আছে।

